২৭ এপ্রিল ২০২৫ - ২৩:৩৫
Source: Parstoday
গাজায় ইসরাইলি নৃশংসতায় ছিন্নভিন্ন পরিবারগুলো: দিনে ৩২ শিশু ও ২২ নারী শহীদ হচ্ছেন

ইহুদিবাদী ইসরাইলের সেনাবাহিনী অত্যন্ত শক্তিশালী ও বিধ্বংসী বোমা ব্যবহার করে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞে লিপ্ত রয়েছে।

ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা উপত্যকায় নিরীহ শিশু, তাদের পরিবারগুলোকে ও তাদের বাড়িকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। ফিলিস্তিনিদের ছিন্নভিন্ন দেহ পার্শ্ববর্তী বাড়ির ছাদে ফেলে দেওয়া হয়। ইসনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, এই হৃদয়বিদারক দৃশ্যগুলো ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান একটি নৃশংস গণহত্যার অংশ এবং মূলত শিশু এবং মহিলারাই মূল টার্গেট।

৭ অক্টোবর, ২০২৩ সাল থেকে, ইহুদিবাদী ইসরাইল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায়, গাজা উপত্যকায় ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে যার ফলে এ পর্যন্ত ১,৬৮,০০০ জনেরও বেশি হতাহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই শিশু এবং মহিলা এবং নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা ১১,০০০ ছাড়িয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনি কর্মী এবং সাংবাদিকদের রেকর্ড করা একটি মর্মান্তিক দৃশ্যে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রচণ্ড বোমাবর্ষণের ফলে গাজা শহরের মধ্যাঞ্চলের ইয়ারমুক পাড়ায় একটি বাড়ির ছাদে ফিলিস্তিনি শিশুদের মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে; এই দৃশ্য ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিরা যে নির্মম গণহত্যার শিকার হচ্ছে এটা তারই একটি দৃষ্টান্ত।

পরিবারগুলো ভেঙে পড়েছে

এদিকে, আহত শিশুদেরকে তাদের মায়েরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তাদের খোঁজ করছে। তাদের চিৎকারে গাজার আকাশ বাতাস ভরি হয়ে গেছে। সে এক অন্যরকম হৃদয়বিদারক দৃশ্য।

আহত শিশুর মা নুসিবা শেহতো শোক ও যন্ত্রণায় ভরা কণ্ঠে আনাতোলি এজেন্সিকে বলেন, "ইসরাইলি বিমান হামলায় আমাদের ঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। আমার স্বামী ও সন্তান নিহত হয়েছে এবং আমার একমাত্র সন্তান বেঁচে আছে, যে কিনা বিস্ফোরণের কারণে পাশের বাড়ির ছাদে ছিটকে পড়েছিল"।

তিনি শান্ত থাকার চেষ্টা করে আরও বলেন, "আমার স্বামী, আমার সন্তান, আমার ভাই এবং তার সন্তান, আমার বোন এবং তার সন্তান সবাই নিহত হয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতার কারণে পাশের বাড়ির ছাদে ছিটকে পড়ে যাওয়া মাত্র একটি শিশু বেঁচে গেছে। আল্লাহকে ধন্যবাদ, আমরা তাকে জীবিত পেয়েছি, কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক"।

২০২৪ সালের ২৩শে অক্টোবর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে যে ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজায় আক্রমণে আমেরিকার তৈরি মার্ক-৮৪ বোমা ব্যবহার করেছে, যা কিনা উচ্চ ধ্বংস ক্ষমতাসম্পন্ন হিসাবে পরিচিত। গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের তথ্য অফিসের পরিচালক জানান,  প্রতিদিন এই উপত্যকায় ৩২ জন শিশু এবং ২২ জন নারী শহীদ হচ্ছেন; এটি একটি মর্মান্তিক পরিসংখ্যান যা ইসরাইলি শাসনের নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরে।#

342/

Your Comment

You are replying to: .
captcha